Monthly Archives: November 2014

নাস্তিকতার করালগ্রাসে বাংলাদেশ । ইবনে আব্দুল্লাহ

বাংলাদেশ একটি জনপদ । বিশ্বাসে বেড়ে ওঠার কথা তাবৎ মুসলিম জনগোষ্ঠী । কারণ যে জনপদের সিংহভাগই মুসলিম । সেখানে আজ নাস্তিক বেঁধেছে বাসা, উদ্ধত উলঙ্গ প্রকাশ তার । অবাধ ও প্রকাশ্য । সমাজের উঁচু স্তরে বসত করে এরা । বাহ্য দৃষ্টিতে মনে হয় অপরিমেয় শ্রদ্ধা ভাজন । বিশ্ববিদ্যালয়, এন,জি,ও কিংবা সরকারী কোন উচ্চ পদমর্যদায় ঘাপটি মেরে থাকে । কেশাগ্র স্পর্শ করার অবকাশ নেই । প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রাষ্ট্র যাদের পৃষ্ঠপোষক । ওরা নাস্তিক, ওদের শিকড় প্রোথিত তেলআবিব, ওয়াশিংটন বা লন্ডন পর্যন্ত । আবার কখনও কখনও শিকড় যেন ব্রাহ্মন্যবাদের জটাধারীদের জটায়-জটায় মিলে মিশে এক হয়ে যায় । তাই ওরা মঙ্গল প্রদীপ জ্বালায় । সূর্য দেবের স্মৃতি গায় । অথচ নিজেকে আড়াল করে পিতৃ প্রদত্ত মুসলিম নামের ছদ্মাবরনে । যেমনঃ মোহাম্মদ শরীফ, নারায়ন আজাদ, শাহ আমসুর রহমান ।

এখানে এদের কর্মকান্ড সম্পর্কে আমরা একটু আলোকপাত করি । উদ্ধৃত ব্যক্তিত্রয়ের প্রথম জন প্রয়াত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক । তিনি ধানমন্ডিতে নিজ বাসভবনে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বদেশ চিন্তা সংঘ ।মূলত! এটি ছিল মুসলিম মনস্ক ছেলে-মেয়েদের ইসলাম থেকে সরিয়ে নেওয়া এবং ক্রমান্বয়ে নাস্তিকতার বোধ জাগ্রত করা ।

তিনি মনে করতেন, ইসলাম উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধক । আর দরিদ্র মানুষরাই এর অনুসরণ করে । তাই তিনি বলেন, দরিদ্র দোষে মানুষ ধার্মিক হয় ।

উদ্ধৃত দ্বিতীয় ব্যক্তির বক্তব্যঃ আমরা সৃষ্টি একটি প্রকৃতিক প্রক্রিয়ার ফল মাত্র । এখানে কোন মহা সত্তার অস্তিত্ব বা উপস্থিতি বিশ্বাস নিছক বোকামী ।

তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই আমার ধর্মে তেমন মতি ছিলনা । রাঢ়িখালের (রাঢ়িখাল তার গ্রামের নাম) অধিকাংশ মানুষ’ই মছিদে (মসজিদে এর বিকৃত লিখন) খুব একটা যাতায়াত করতনা ।

তিনি আরো বলেন, যে কোন নির্বোধের পক্ষে ধার্মিক হওয়া সহজ, কিন্তু শুধু জ্ঞানী ও মানবিক ব্যক্তিই হতে পারে নাস্তিক । নাস্তিক হত্যা আর ধ্বংস করে না; কিন্তু ধার্মিক সব সময় হত্যা ও ধ্বংসের জন্য ব্যগ্র থাকে । নাস্তিক চায় মানুষের চেতনাকে বদলে দিতে, মানুষকে বিকশিত করতে; আর ধার্মিক চায় মানুষের চেতনাকে নষ্ট করতে, মানুষকে রুদ্ধ করতে । ধার্মিকদের নৈতিকতাবোধ খুবই শোচনীয় ।

এভাবে তিনি প্রকাশ্যে কোমল মতি ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরে নাস্তিকতার বীজ বপন করেন, লালন করেন এবং মহীরুহ রুপে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখেন ।

তিনি বলেন, ধার্মিকদের নৈতিকতাবোধ খুবই শোচনীয় । অথচ, তাঁর রচিত একটি উপন্যাসের অংশবিশেষঃ যেখানে এক মওলানা মুজাহিদের উদ্দেশ্যে বলেনঃ মালাউন গো মাইয়া গো লগে করবা । অইতে গুনা নাই। সোবহানাল্লা ।

Òহাতদিয়াদ্যাখো, তোমাদেরদুইরানেরমাঝখানেকিআছে ? কিঝুলছে ? তারাহাতদিয়েদৃঢ়দন্ডঅনুভবকরে, স্বরমপায়।আমিজিজ্ঞেসকরি, কিআছেওখানে ? ওরাবলেহুযুরআমাগোলিঙ্গ।আমিবলিওটালিঙ্গনয়,পিস্তল, এম-১৬।ওইটাখোদারদেওয়াপিস্তল।ওইটাচালাতেহবেমালাউনমেয়েগুলারপেটে।জিহাদেরএটাইনিয়ম।

এর পরেও এরা শালীন, নৈতিকতার দাবীদার। নীতি হীন, বিবেক বিবর্জিত কর্মকান্ডের পরেও শ্রদ্ধাভাজন ওরা।

নবী রাসুলদের পর্যন্ত তাচ্ছিল্য করতে ছাড়েনি । যেমন তিনি বলেন,নবীদের অনেকেই ছিল শস্তা জ্যোতিষ । মোজেস বা মূসা তোতলা ছিলেন,ঠিক মতো কথা বলতে পারতেন না । নবী হওয়ার ইচ্ছেও তার ছিল না। অনিচ্ছায়ই তিনি নবী হয়েছিলেন। ওই অন্ঝলের পথে পথে নবী পাওয়া যেত।

এভাবে সম্মানিত নবী রাসুলরা পর্যন্ত বাংলার জমীনের তথাকথিত নাস্তিকদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না ।

তিনি মদ্যপান প্রসঙ্গে প্রিয় রাসূলের সমালোচনা করে বলেন, পৃথিবী জুড়েই মুসলমান মদ্যপান করে, আর আরবরা পান করে না,মাছের মত গিলে । মদ্যপান মুসলমানের জন্য একদিনে নিষিদ্ধ হয়নি,হয়েছে ক্রমশ, এক বিখ্যাত ব্যাক্তির (রাসূলকে ইংগিত করা হয়েছে) মত্ততার কারণেই এটা নিষিদ্ধ হয়ে যায় চিরকালের জন্য । এর জন্য ব্যাবস্হা হয় আশিটি চাবুকের ,এমনকি মৃতুদন্ডের । এ অসুস্হতা থেকে উঠে আসতে হবে মুসলমানকে । মদকে মনে করতে হবে একটি পানীয় । যা প্রাপ্ত বয়স্ক পান করে।

উক্ত নাস্তিক কুরআনের আয়াতের সমালোচনা করে বলেন; কোরানে আছেঃ পুরুষ নারীর কর্তা , কারণ আল্লাহ তাদের একে অপরের ওপর শ্রেষ্ঠত দান করেছেন এবং এজন্য যে পুরুষ ধন সম্পদ ব্যয় করে । স্ত্রীদের মধ্য যাদের অব্যাধতার আশংকা করো তাদের সুদপদেশ দাও,তারপর তাদের শয্যা বর্জন করো এবং তাদের প্রহার করো।(সুরা নিসা ৩৪)

পুরুষ ও নারী ইসলামে ব্যাক্তি হিসেবে প্রভু ও দাসী । নারী দাসী ও সম্ভোগের বস্তু। ইসলামে নারীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে চুড়ান্তভাবে পুরুষের কাম সামগ্রীরুপে উপস্হাপিত হওয়ার জন্য।

নাস্তিক বলেন,বেহেশত পুরুষের বিলাস স্থল । সেখানে পার্থিব নারী বা স্ত্রীদের স্হান নেই । পৃথীবিতে তারা চুক্তিবদ্ধ দাসী, স্বর্গে অনুপস্হিত বা উপস্হিত বা উপেক্ষিত । ইসলামি আইনে নারীকে নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে এ দৃষ্টকোণ থেকেই ।“উদ্ধত নাস্তিক । এটা মুসলিম বিশাল জনগোষ্ঠীর বিস্তৃত বাংলাদেশ । ভাবতে আবাক লাগে । আরো অসংখ্য অগনন ইসলাম বিরুদ্ধ উক্তিতে মুখর নাস্তিক ।

এখনই সময়, মহান রব্বুল আলামিন,প্রিয় রাসুল,পবিত্র কুরআন যাদের হাতে লাঞ্ছিত হয়, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর । প্রয়োজন মর্দে মুজাহি্দ, সাহাবাদের মত জানাবাজ ইসলামী সেনানী । আল্লাহর জমীনে দাড়িয়ে যারা আল্লাহর হুকুমের বিপক্ষে অবস্হান নিয়েছে চিহ্নিত সেই নাস্তিকদের সমূলে উৎপাটন করার এখনই সময় । বাংলার ঐ প্রত্যন্ত প্রান্তর হাতছানি দিয়ে ডাকে আয় মুজাহিদ, ছুটে আয় । নাস্তিকতার করালগ্রাস থেকে বাংলাদেশ বাচঁতে চায় । (১ম পর্ব সমাপ্ত)

Learn WordPress

Always wanted to be a blogging superstar? Or simply want to learn your way around WordPress.com? Check out Learn WordPress.com.

Taking Shape

Things are starting to take shape around here. I hope you’re liking this theme!

Gallery

কুরআন ও হাদীস থেকে নির্বাচিত ৮৭টি দোয়া:

কুর‘আন ও হাদীস থেকে নির্বাচিত দো‘আ সমূহ • কুরআনের নির্বাচিত দো‘আ: ১- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺁﺗِﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻭَﻓِﻲ ﺍﻵﺧِﺮَﺓِ ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻭَﻗِﻨَﺎ ﻋَﺬَﺍﺏَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ১। হে আমাদের প্রভু! দুনিয়াতে আমাদের কল্যাণ দাও এবং আখিরাতেও কল্যাণ দাও। আর আগুনের আযাব থেকে আমাদেরকে … Continue reading

Gallery

আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার সুন্দর সুন্দর নাম সমুহ, সেগুলোর অর্থ ও সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নাম, সেগুলোর অর্থ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা আল্লাহ্ বলেন ﻭَﻟِﻠَّﻪِ ﺍﻟْﺄَﺳْﻤَﺎﺀُ ﺍﻟْﺤُﺴْﻨَﻰ ﻓَﺎﺩْﻋُﻮﻩُ ﺑِﻬَﺎ “আল্লাহর অনেক সুন্দর সুন্দর নাম আছে, সেই নামের মাধ্যমে তোমরা তাঁকে ডাক। (সূরা আরাফঃ ১৮০) আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু … Continue reading

Gallery

শরিয়ত সম্মত উপায়ে ঝাড় -ফুক করার শর্তাবলী :

শরীয়ত সম্মত উপায়ে ঝাড়-ফুঁক করার শর্তাবলী ১- ঝাড়-ফুঁক হতে হবে আল্লাহর কোরআন অথবা, তাঁর নামসমূহ অথবা তাঁর গুনাবলীসমূহ দ্বারা। ২- ঝাড়-ফুঁক হতে হবে আরবী বা অন্য যে কোনো ভাষায়, যার অর্থ জানা যায়। ৩- এ কথায় দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে … Continue reading

Aside

আল্লাহ মানব জাতিকে সৃষ্টি করে তাঁর ইবাদত করার নির্দেশ দিয়েছেন। মানুষ আল্লাহর নির্দেশ ভুলে পার্থিব চাকচিক্য দেখে শয়তানের ধোঁকায় পড়ে প্রতিটি মুহূর্তেই গোনাহের মধ্যে পতিত হচ্ছে। আল্লাহ অসীম দয়ালু হিসাবে মানুষের গোনাহ ক্ষমা করার জন্য অনেক পদ্ধতি ও বিশেষ আমল … Continue reading

“ঈমান ধ্বংসকারী আমল” !

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার যিনি অসীম দয়ালু পরম করুণাময়। আরম্ভ করছি আল্লাহর নামে এবং দরূদ ও সালাম প্রেরণ করছি নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর প্রতি। বর্তমান মুসলিম সমাজের কতিপয় কার্যকলাপের চরম সংশয় সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। ইবাদত তথা ইসলামের নামে প্রচলিত ভন্ডামি, শিরক, বিদআত এবং কুফর এর বিরুদ্ধে কুরআন (কিতাবুল্লাহ) এবং হাদীস (সুন্নাতু রাসুলুল্লাহ)-এর কিছু দলীল প্রচার করা নিজের দায়িত্ব মনে করছি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু শিরক এবং কুফর, যা আমরা ইবাদত, ইসলামের অন্তর্ভূক্ত এবং সওয়াবের বিষয় বলে বিবেচনা করি। আমাদের এ সকল আমল শুধু আমাদেরকে সম্পূর্ণ গোমরাহির দিকেইনিয়ে যাচ্ছে না বরং জাহান্নামের ভয়াবহতম লেলিহান আগুনে আমাদের চির জীবনের আবাসস্থল তৈরি করছে। রাসূলগণ, সাহাবাগণ এবং তাঁদের পর অন্তত কয়েক শত বছর কারো মধ্যে এ সকল শরীয়াত বিরোধী আমল খুজে পাওয়া যায় না, যা আমাদের যুগে বিষধর সাপের ন্যায় ধীরে ধীরে আমাদের ধর্মে (দ্বীনে) প্রবেশ করেছে।

নিম্মে কিছু প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে এর সমাধান করার চেষ্টা করেছি এবং প্রত্যেক উত্তরের জন্য কুরআন এবং সুন্নাহ থেকে দলীল দেয়ার চেষ্টা করেছি।

প্রশ্ন ১: আল্লাহ তায়ালা আমাদের কেন সৃষ্টি করেছেন?

উত্তরঃ যেন আমরা এক মাত্র আল্লাহর ইবাদত করি এবং তাঁর সাথে কোন শিরক না করি।

কুরআনের দলীলঃ “আমার এবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।” (সুরা যারিয়াতঃ ৫৬)

হাদীসের দলীলঃ “বান্দার উপর আল্লাহর হক হচ্ছে তাঁর ইবাদত করা এবং তাঁর সাথে কোন শিরক না করা।”

(বুখারী ও মুসলিমের মিলিত হাদীস)

প্রশ্ন ২: যদি আমরা আল্লার সাথে শিরক করি তাহলে কি আল্লাহ ক্ষমা করবেন?

উত্তরঃ না, আল্লাহ মুশরিক (শিরককারী)কে কখনই ক্ষমা করবেন না।

কুরআনের দলীলঃ “নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ্ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম” (সুরা মায়িদাঃ৭২)

হাদীসের দলীলঃ “যে ব্যক্তি ঐ অবস্থায় মারা যায় যে, সে আল্লাহর সাথে শিরক করত, তবে তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। (মুসলিম)

প্রশ্ন ৩: শিরকের সাথে কোন আমল করলে কি কোন লাভ হবে?

উত্তরঃ না, কোন লাভই হবে না বরং অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

কুরআনের দলীলঃ “যদি তারা শেরেকী করত, তবে তাদের কাজ কর্ম তাদের জন্যে ব্যর্থ হয়ে যেত।” (সুরা আন্ আমঃ ৮৮)

হাদীসের দলীলঃ “যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করবে যাতে আমার সাথে অন্যকে শরিক করে, তখন তাকে এবং তার শিরকী আমল আমি পরিত্যাগ করি।” (মুসলিম, হাদীসে কুদছি)

প্রশ্ন ৪: আমরা কিভাবে আল্লাহর ইবাদত করব?

উত্তরঃ যেভাবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) হুকুম করেছেন, সেভাবে।

কুরআনের দলীলঃ “তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম।” (সুরা বাইয়েনাহঃ ৫)

হাদীসের দলীলঃ “যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করে যা আমাদের (অনুমোদিত) শরিয়াত সম্মত নয়, তা বাতিল বলে গণ্য হবে।”(মুসলিম)

প্রশ্ন ৫: আল্লাহ তায়ালা কেন রাসূলদের প্রেরণ করেছেন?

উত্তরঃ একমাত্র তাঁরই ইবাদত করতে এবং তাঁর সাথে শরিক করা হতে নিষেধ করতে।

কুরআনের দলীলঃ “ আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর এবং তাগুত থেকে নিরাপদ থাক।” (সুরা নাহলঃ৩৬)

হাদীসের দলীলঃ “প্রত্যেক নবী একে অন্যের ভাই আর তাঁদের দ্বীনও এক, অর্থাৎ প্রত্যেক রাসূলই তাওহীদের দাওয়াত দিয়েছেন।”(বুখারী ও মুসলিম)

প্রশ্ন ৬: আল্লাহ তায়ালার ইবাদতে একত্ববাদ (তাওহীদ) কি?

উত্তরঃ প্রতিটি ইবাদত একমাত্র তাঁরই জন্য করা যেমন, দু’আ করা, মানত করা, হুকুম মানা, আইন মানা।

কুরআনের দলীলঃ “আর জেনে রেখো তিনি ব্যতীত আর কোন মা’বুদ নাই। অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত কোন মা’বুদ নাই।” (সুরা মুহাম্মাদঃ ১৯)

হাদীসের দলীলঃ “সর্ব প্রথম তুমি তাদের লা-ইলাহার সাক্ষ্য দিতে বলবা অর্থাৎ একমাত্র তাঁর একত্ববাদের (তাওহীদের) দাওদাত দিবে।”(বুখারী ও মুসলিমের মিলিত হাদীস)

প্রশ্ন ৭: বড় শিরক কি?

উত্তরঃ তা হচ্ছে ইবাদতের কোন অংশ আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য নির্দিষ্ট করা। যেমন, পীব-ফকিরের কিছু চাওয়া, পীরের নামে মানত করা, সওয়াবের আশায় পীরের বাড়ীতে গমন করা, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো আইন গ্রহন করা ইত্যাদি।

কুরআনের দলীলঃ “(হে নবী) বলুনঃ আমি তো আমার রবের ইবাদত করি আর তাঁর সাথে কোন শিরক করি না।” (সুরা জ্বীনঃ ২০)

হাদীসের দলীলঃ “সবচেয়ে বড় পাপ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শিরক করা।” (বুখারী)

প্রশ্ন ৮: শিরক কি বর্তমানে বিদ্যমান আছে?

উত্তরঃ হ্যাঁ, খুবই বেশী পরিমাণে বিদ্যমান আছে।

কুরআনের দলীলঃ “অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে এবং সাথে সাথে শিরকও করে।” (সুরা ইউসুফঃ ১০৬)

হাদীসের দলীলঃ “ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত ঘটবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমার উম্মতের একদল মুশরিক না হয়ে যায় এবং তারা মূর্তি, গাছ,পাথরের পূজা না করে।” (সহীহ্, তিরমিযি)

প্রশ্ন ৯: আল্লাহ ছাড়া কোন পীর-আওলিয়ার নিকট দু’আর হুকুম কি?

উত্তরঃ তাদের নিকট দু’আ করা শিরক এর অন্তর্ভূক্ত।

কুরআনের দলীলঃ “আর আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা’বুদের নিকট দু’আ করো না, তাহলে আযাবে নিপতিত হবে।” (সুরা আশ্ শুআরাঃ ২১৩)

হাদীসের দলীলঃ “যে এ অবস্থায় মারা যায় যে, সে আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা’বুদের নিকট দু’আ করত, তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” (বুখারী)

প্রশ্ন ১০: দু’আ কি ইবাদতের শামীল?

উত্তরঃ অবশ্যই ইবাদতের শামীল।

কুরআনের দলীলঃ “আর তোমাদের রব বলেন আমার নিকট দু’আ করো; অবশ্যই আমি কবুল করব।” (সুরা গাফিরঃ ৬০)

হাদীসের দলীলঃ “দু’আ হচ্ছে ইবাদত।” (সহীহ্ তিরমিযি)

প্রশ্ন ১১: মৃত ব্যক্তিরা, মৃত পীর-আওলীয়ারা কি তাদের নিকট কৃত দু’আ শুনতে পায়?

উত্তরঃ মৃতরা কখনই শুনতে পায় না।

কুরআনের দলীলঃ “নিশ্চয়ই তুমি মৃতদের শ্রবণ করাতে পারবে না।” (সুরা নামলঃ৮০)

হাদীসের দলীলঃ “আল্লাহ তায়ালার কিছু সংখ্যক মালাইকা (ফিরিশতা) আছেন যারা দুনিয়াতে ঘুরে বেড়ায় আমার উম্মতের তরফ হতে তারা আমাকে সালাম পৌছায়।” (সহীহ্, আহমদ)

প্রশ্ন ১২: আমরা কি বিপদে মৃত ব্যক্তিদের অথবা পীর-আওলীয়াদের বা অনুপস্থিত ব্যক্তিদের নিকট সাহায্য চাইব?

উত্তরঃ না, অবশ্যই তাদের নিকট সাহায্য চাইব না, বরং একমাত্র আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইব।

কুরআনের দলীলঃ “যখন তোমরা তোমাদের রবের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছিলে, তখন তিনি তোমাদের সাহায্য করেন।” (সুরা আনফালঃ ৯)

হাদীসের দলীলঃ “হে চিরঞ্জিব, হে চিরস্থায়ী, তোমার রহমতের অছিলায় সাহায্য প্রার্থনা করি।” (তিরমিযি)

প্রশ্ন ১৩: পীর-আওলীয়াদের নিকট সাহায্য চাওয়া কি জায়িয?

উত্তরঃ না, জায়িয নয়।

কুরআনের দলীলঃ “নিশ্চয়ই আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি ও তোমারই নিকট সাহায্য চাই।” (সুরা ফাতিহাঃ ৫)

হাদীসের দলীলঃ “যদি কোন কিছু চাও, তবে আল্লাহর নিকট চাও। যদি সাহায্য চাও তবে একমাত্র তার নিকটই চাও।” (তিরমিযি)

প্রশ্ন ১৪: পীরের নামে মানত করা কি জায়িয?

উত্তরঃ সম্পূর্ণ নাজায়িয।

কুরআনের দলীলঃ “হে আমার রব আমার পেটে যে বাচ্চা আছে তা তোমার নামে উৎসর্গ করছি।” (সুরা আল ইমরানঃ ৩৫)

হাদীসের দলীলঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্যের জন্য মানত করে সে যেন তা পূর্ণ করে, আর যে তার বিরুদ্ধে পাপাচরণে মানত করে সে যেন তা হতে বিরত থাকে।” (বুখারী)

প্রশ্ন ১৫: পীরের নামে যবেহ্ করা কি জায়িয?

উত্তরঃ এটা শিরক। আল্লাহ ছাড়া কারো নামে যবেহ করা জায়িয নয়।

কুরআনের দলীলঃ “আর তোমার রবের সালাত আদায় কর আর যবেহ (কুরবানী) কর।” (সুরা কাওছারঃ ২)

হাদীসের দলীলঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে যবেহ্ করে তার উপর আল্লাহর লা’নত (অভিশাপ)।” (মুসলিম)

প্রশ্ন ১৬: কোন ভবিষ্যৎ বর্ণনাকারী পীরের কথা কি বিশ্বাস করা যায়?

উত্তরঃ না, কোন পীরের ভবিষ্যৎবাণী বিশ্বাস করা শিরক।

কুরআনের দলীলঃ “(হে নবী) বলুনঃ আসমান ও জমীনের গায়িবের খবর আল্লাহ ছাড়া কেউ জানের না।” (সুরা নামলঃ ৬৫)

হাদীসের দলীলঃ “যে ব্যক্তি কোন গণক বা ভবিষ্যৎ বর্ণনাকারী ব্যক্তির নিকট গমন করে এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করে, তবে সে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তাকে যেন অস্বীকার করল।” (সহীহ্, আহমদ)

প্রশ্ন ১৭: সুস্থতা লাভের জন্য তাবিজ বা এই জাতীয় জিনিস ব্যবহার করা কি জায়িয?

উত্তরঃ এগুলোর অনেক কিছুই শিরকের অন্তর্ভূক্ত।

কুরআনের দলীলঃ “আর যদি তোমাকে কোন খারাবী স্পর্শ করে, তবে তা দূর করার ক্ষমতা তিনি ছাড়া অন্য কারো নেই।” (সুরা আন’আমঃ ১৭)

হাদীসের দলীলঃ “যে ব্যক্তি কোন তাবিজ ব্যবহার করল সে যেন শিরক করল।” (সহীহ্, আহমদ)

প্রশ্ন ১৮: কোন পীর আউলিয়ার অছিলা করে দু’আ করার কি প্রয়োজনীয়তা আছে?

উত্তরঃ না, কোন পীর বা আউলিয়ার অছিলা করে দু’আ করার প্রয়োজন নেই।

কুরআনের দলীলঃ “আর যদি বান্দা আপনাকে আমার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে, তবে বলুন, আমি অতি নিকটে, দু’আকারীর দু’আর জবাব দেই যখন সে আমাকে ডাকে।” (সুরা বাকারাহঃ ১৮৬)

হাদীসের দলীলঃ “নিশ্চয় তোমরা এমন জাতকে ডাকছো, যিনি সর্বশ্রোতা ও অত্যন্ত নিকটে এবং তিনি তোমাদের সাথে আছেন। অর্থাৎ ইলমের দ্বারা তিনি তোমাদের দেখেন ও কথা শ্রবণ করেন।” (মুসলিম)

প্রশ্ন ১৯: আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজীদকে কেন অবতীর্ণ করেছেন?

উত্তরঃ এটি এজন্য অবতীর্ণ করা হয়েছে, যেন তার উপর আমল করা হয়।

কুরআনের দলীলঃ “তোমাদের রবের তরফ হতে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তাকে অনুসরণ কর।” (সুরা আ’রাফঃ ৩)

হাদীসের দলীলঃ “কুরআন তিলাওয়াত করতে থাক, আর তার উপর আমল করতে থাক, তার দ্বারা অর্থ উপার্জন করো না, বেশি বেশি আয়ের লোভও করো না।” (আহ্মদ, সহীহ্)

প্রশ্ন ২০: আমরা কি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথার উপর কোন পীর, ইমাম, আউলিয়া বা মণিষীদের কথাকে অথবা তাদের রচিত বই পুস্তককে প্রাধান্য দিব?

উত্তরঃ না, অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথার উপর এক বিন্দু পরিমাণ কাউকে প্রাধান্য দেয়া জায়িয নয়, বরং আল্লাহর হুকুমের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।

কুরআনের দলীলঃ “হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর কাউকে প্রাধান্য দিবে না।” (সুরা হুজরাতঃ ১)

হাদীসের দলীলঃ “আল্লাহর বিরুদ্ধাচারণের কারো কোন আনুগত্য চলবেনা। একমাত্র ভাল কাজেই আনুগত্য চলবে।” (বুখারী ও মুসলিম)

প্রশ্ন ২১: যদি আমাদের মধ্যে মতবিরোধ হয় তখন কি করব?

উত্তরঃ তখন আল্লাহর কিতাব (কুরআন) ও সহীহ্ সুন্নাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন করব।

কুরআনের দলীলঃ “যদি তোমাদের কোন ব্যাপারে মতবিরোধ হয় তখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে প্রত্যাবর্তন কর।” (সুরা নিসাঃ ৫৯)

হাদীসের দলীলঃ “তোমাদের মধ্যে আমি দুটো জিনিস রেখে যাচ্ছি, যদি তা আঁকড়ে ধর, তাহলে কখনো গোমরাহ্ হবেনা, তা হল আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাহ।” (মালিক, সহীহ)

প্রশ্ন ২২: দ্বীনের (ধর্মের) মধ্যে কি বিদআতে হাসানাহ আছে?

উত্তরঃ না, দ্বীনের (ধর্মের) মধ্যে বিদআতে হাসানাহ্ বলে কোন জিনিস নেই। কিছু আছে “মাসলাহাতিল উম্মাহ” যা তা দ্বীনের জন্য ও মানুষের জন্য সহায়ক কিন্তু দ্বীনের মধ্যে নয়।

কুরআনের দলীলঃ “আজ তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণতা দিলাম, আমার নিয়ামত তোমাদের উপর পূর্ণ করলাম, আর ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন (জীবন ব্যবস্থা) হিসেবে মনোনীত করে তার উপর রাজী হয়ে গেলাম।”(সুরা মায়িদাঃ ৩)

হাদীসের দলীলঃ “ওহে! সমস্ত ধরনের (নতুন আবিষ্কার) বিদআতের ব্যাপারে সাবধান, কারণ দ্বীনের প্রতিটি নতুন সংযোজনই বিদআত,আর প্রতিটি বিদআতই গোমরাহী (পথভ্রষ্টা)।” (সহীহ্, আবু দাউদ)

প্রশ্ন ২৩: দ্বীনের মধ্যে বিদআত কি?

উত্তরঃ ইসলামের নামে ঐ সমস্ত কাজ যাতে শরীয়াতের কোন সহীহ্ দলীলা নেই।

কুরআনের দলীলঃ “আর তাদের কি কোন শরীক আছে যারা তাদের জন্য ঐ নতুন দ্বীনের প্রবর্তন করেছে, যার ব্যাপারে আল্লাহর সম্মতি নেই।”(সুরা শুরাঃ ২১)

হাদীসের দলীলঃ “যারা আমাদের হুকুমের মধ্যে এমন কোন নতুন কথার প্রবর্তন করবে, যা আমাদের কথা নয়, তবে তা পরিত্যক্ত।”(বুখারী ও মুসলিম)

প্রশ্ন ২৪: ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন আইন মানার অনুমতি আছে কি?

উত্তরঃ না, বরং অন্য আইনের উপর চলা, তাকে সঠিক মনে করা বা বিকল্প মনে করা শিরক।

কুরআনের দলীলঃ “আর যারা আল্লাহ কর্তৃক অবতীর্ণ বিধান দ্বারা বিচার করবে না তারা কাফির।” (সুরা মায়িদাঃ ৪৪)

কুরআনের দলীলঃ “অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মেনে না নিবে। অত:পর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হৃষ্টচিত্তে মেনে নিবে।”

হাদীসের দলীলঃ “যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের শাসকগণ আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী শাসন না করবে, আর আল্লাহ প্রদত্ত বিধানের কোন্টা গ্রহণ করবে, কোন্টা ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তায়ালা তাদের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করে দিবেন।” (ইবনে মাজাহ্)

আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ তায়ালা আপনাকে, আমাকে সঠিক দ্বীন ইসলামের উপর কুরআন সুন্নাহ্ মুতাবিক চলার তাওফিক দান করুন এবং শয়তানের ছত্রছায়া থেকে রাব্বুল আলামীন তাঁর নিকট আমাদের আশ্রয় দান করুন, আমীন। সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া আশহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লা আনতা, আসতাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইক।

মূলঃ শাঈখ জসিমুদ্দীন রাহমানী

Aside

কি ঘটেছিল কারবালায়? কারা হুসাইন (রা:) কে হত্যা করেছে? (কারবালার ঘটনা সম্পর্কে একটি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ-যা অনেক ভুল ধারণা ভেঙ্গে দিবে ইনশাআল্লাহ) প্রশংসা মাত্রই আল্লাহর জন্য, যিনি বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর … Continue reading